পশুর শ্রেনী, পালনের ধরন, মালিকানা, বয়স ও নিসাবের সংখ্যা অনুযায়ী যাকাত ধার্য্য হয়। তবে সকল পশুর যাকাত নাই। উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদির উপর যাকাত ফরজ। রাসুলে করীম (সাঃ) ও খিলাফাতের আমলে পশু সম্পদকে অর্থনীতির ভিত্তি মনে করা হতো। বর্তমানে পোপট পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশে সম্ভবত সায়েমা পশু পাওয়া যাবে না। সায়েমা হলো সেই পশু যা বছরের অধিকাংশ সময় নিজেই মাঠে/ঘাসে বিচরন করে খাদ্য গ্রহন ও বংশ বৃদ্ধি করে থাকে।
(ক) পশুর যাকাতের শর্তঃ
১) নির্র্ধারিত নিসাব পরিমান পশু থাকলে যাকাত দিতে হবে (পশুর নিসাব কত তাহা
সম্পদের নিসাব ও যাকতের অধ্যায় দ্রষ্টব্য)।
২) শুধুমাত্র চারন ভুমিতে পালিত সায়েমা পশু ও ব্যবসার উদ্দেশ্যে পালিত পশুর যাকাত
দিতে হবে।
৩) যে পশু গৃহে আহার বা গৃহকর্তার ব্যবস্থাপনায় আহার খায় বা গৃহস্থালীর কাজ করে বা
বাহনের কাজ করে সে সকল পশুর যাকাত দিতে হবে না।
৪) অশ্ব যখন বংশ বৃদ্ধি বা ব্যবসার জন্য পালিত হয় তখন যাকাত দিতে হবে।
আরোহন,পরিবহন ও যুদ্ধের জন্য পালিত হলে যাকাত দিতে হবেনা।
১৪। ডেইরী, পোল্ট্রি ও মৎস্য খামারের যাকাতঃ
বর্তমান যুগের ডেইরী ফার্ম, পোল্ট্রি ফার্ম বা মৎস্য খামারের প্রচলন পূর্বে ছিল না। বর্তমানে ইহার যাকাত নির্ধারনের জন্য মধুর যাকাত বা গুটি পোকা ও রেশমের যাকাতের মূলনীতি অনুসরন করে যাকাত নির্ধারন করা হয়েছে, যাহা নিম্নরুপঃ
(ক) ডেইরী, পোল্ট্রি ও মৎস্য খামারের যাকাতের শর্তঃ
১) ডেইরী ফার্মের গবাদি পশু দুগ্ধ, মাখন উৎপাদনের উদ্দেশ্যে পালিত হলে এসব পশু পন্য উৎপাদক পর্যায় ভুক্ত। তাই এসবের যাকাত দিতে হবে না। তবে উৎপন্ন দ্রব্যের যাকাত দিতে হবে।
২) পশু মোটা তাজা করে বিক্রির জন্য পালিত হলে তার যাকাত দিতে হবে।
৩) পোল্ট্রি ফার্মে যদি ডিম বিক্রি বা ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য হাঁস মুরগি পালিত হয় তবে তার যাকাত দিতে হবেনা, তবে ডিম বা বাচ্চার যাকাত দিতে হবে।
৪) পোল্ট্রি ফার্মের ব্রয়লার/বাচ্চা বড় করে গোশতের জন্য বা লাভের জন্য বিক্রি করলে তার যাকাত দিতে হবে।
৫) মৎস্য খামারে রেনু বা পোনা বিক্রির জন্য পালিত মাছের যাকাত দিতে হবে না, তবে রেনু বা পোনার যাকাত দিতে হবে।
৬) ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে মৎস্য চাষ করলে তার যাকাত দিতে হবে, তবে শুধুমাত্র পরিবারের খাবারের জন্য চাষকৃত মাছের যাকাত দিতে হবে না।
যাকাত সম্পর্কে আরো জানতে এখানে ক্লিক করুন।